২টি ধর্মীয়+টেকীয় চিন্তা
১। কুরআনের অনুবাদ, ওয়েবসাইট এবং অ্যাপে
১। দেশ-বিদেশের যত ইসলামী ওয়েবসাইট / অ্যাপ আছে, যেগুলোতে কুরআন শরীফ পড়া যায়- সেগুলোতে বাংলা অনুবাদ হিসেবে যেগুলো থাকে-
১। মাওলানা মুহিউদ্দিন খান ২। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদ ৩। মুফতী তাকী উসমানীর অনুবাদও দেখছি।
এছাড়া Quran.com এ আছে- তাইসীরুল কুরআন, শায়েখ মুজিবুর রহমান, রাওয়াউল বয়ান, ড. আবু বকর মুহাম্মদ জাকারিয়া।
সম্প্রতি কোরআনুল কারীমের তারজুমানী, by মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ – প্রকাশিত হয়েছে। আমি তাঁর ব্যাপারে যা জানি এবং যা ধারণা রাখি- যে কোনো অ্যাপ/ওয়েবসাইট যদি উনার অনুবাদ নিজের অ্যাপে/ওয়েবসাইটে যুক্ত করতে চায়- উনি অনুমতি দেবেন। এবং কেউ যদি অনুমতি না নিয়েও করে ফেলে- যা করা মোটেই উচিত না- উনি প্রতিবাদ/নিন্দা এজাতীয় কিছু করবেন না, মামলা-লিগ্যাল নোটিশ তো দূরের কথা- বিশেষ করে যেহেতু এটি কুরআনের অনুবাদ, নিজের কোনো মৌলিক লিখনী না।
আমার প্রস্তাবনা হচ্ছে- এক্ষেত্রে দারুলকলম থেকেই যদি সহযোগীতা পাওয়া যেতো, সহজ হতো। অর্থাৎ-
পুরো .doc / .docs – এককথায় মূল ফাইলটি যদি পাওয়া যেতো, তাহলে অনলাইনে সবার জন্য উন্মুক্ত করার ব্যাপারটা অনেক অনেক সহজ হয়ে যেতো।
১। সেই ডক্স ফাইল না পেলে কয়েকজনের টিম বানাতে হবে- যারা কয়েকসপ্তাহ সময় খরচ করে হার্ডকপি দেখে দেখে পূর্ণ অনুবাদ টাইপ করবে। বা স্ক্যান করে / ছবি তুলে সেটা থেকে OCR করে প্রুফরিড করতে হবে। কিন্তু .doc/.docs ফাইল পেলে যদি ইউনিকোডে থাকে, তাহলে তো ভালোই, আর যদি বিজয়েও থাকে- তবুও তো ইউনিকোডে কনভার্ট করে পরের ধাপে চলে যাওয়া যাবে।
২। দ্বিতীয় ধাপে যা বলবো- তা ঐচ্ছিক, কিন্তু করলে করা যায়- যেমন একটি github id খুলে repo ক্রিয়েট করে বিভিন্ন ফরম্যাটে দিয়ে দেয়া। .txt, epub, pdf ইত্যাদি। এটি যে খুব কাজে লাগবে তা না – তবে দিলে দেয়া যায়। (এখানে pdf বলতে মূল কিতাবের স্ক্যান/pdf বোঝানো হয়নি, শুধুমাত্র অনুবাদের পিডিএফ)।
৩। API, পুরো কুরআন শরীফের অনুবাদকে JSON বানানো, এবং সেই JSON থেকে API বানানো। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- quran.com/7/12 লিংকে ভিজিট করলে ৭ নং সূরার ১২ নং আয়াত দেখা যাবে, একইভাবে abutahermisbah.com/7/12 লিংকে ভিজিট করলে যেন ৭ নং সূরার ১২ নং আয়াতের বাংলা অনুবাদ দেয়া যায়। (এখানে quran.com frontend দিয়ে api এর উদাহরণ দিলাম বুঝানোর সুবিধার্থে, quran.com/api আলাদা জিনিস, যা অলরেডি আছে)
এটি করলেই সবার জন্য এক আয়াত বা এক সূরার অনুবাদ একসাথে নেয়া, গ্রহণ করা সহজ হয়ে যাবে।
৪। সেই গিটহাব রিপোতে লাইসেন্স অ্যাড করা। MIT License, Creative Commons (chooser) সহ বিভিন্ন লাইসেন্স সিলেক্ট করা যেতে পারে। সেই লাইসেন্স মেনে যে কেউ ব্যবহার করতে পারবে। সেই লাইসেন্সেই বলা থাকবে- অনুবাদ কি কেউ আংশিক / বড় ধরণের পরিবর্তন করতে, বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করতে পারবে কিনা, নাম-অনুবাদক-প্রকাশনীর ক্রেডিট দিতে হবে কিনা ইত্যাদি। (একটি অ্যাপ যদি এমন থাকে- যেটি ব্যবহারের জন্য বা যেই অ্যাপের বিশেষ কিছু সুবিধা পেতে টাকা দিতে হয়- সেই অ্যাপ কি এই অনুবাদ নিতে পারবে কিনা?)
৫। আলকাউসারে যদি এই উন্মুক্তের বিষয়টি ঘোষণা দেয়া হতো, ভালোই হতো। না দিলেও- দ্বীনি টেক সার্কেলের কয়েকজন ভাই যদি শেয়ার দেয়, বেশ প্রচার হয়ে যাবে।
২। মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের রেজাল্টের ওয়েবসাইট
আমাদের দেশে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড অনেকগুলোই আছে, ৮+টি হতে পারে, কিন্তু নাম ৪+টি। দুটির নাম বেফাক, দুটির নাম ইত্তেহাদ, দুটির নাম তানযীম, দুটি ইত্তেফাক- এভাবে আরকি!
যাই হোক, কথা হচ্ছে- এই একটি শিক্ষাবোর্ডেরই ওয়েবসাইটই নেই, আর থাকলেও মানসম্মত ওয়েবসাইট নেই।
হাইয়াতুল উলয়ার আছে, তাও প্রথম ১-২ বছর ছিলো না, পরে ডাইনামিক সলিউশন্স বা এজাতীয় একটি আইটি/সফটওয়্যার কোম্পানি থেকে করে নিয়েছে। অবশ্যই খরচ অনেক, কিন্তু করতে তো হবে।
এবার আসি বেফাকে। সমস্যা হলো-
১। বেফাকের রেজাল্ট প্রকাশের ওয়েবসাইটের URL গত ১০ বছর ২+ বার পরিবর্তন হয়েছে। একবার wifaqbd.org তো আরেকবার wifaqresult.com। এটি ভালো ব্যাপার না।
২। অনেক বছরের রেজাল্ট এক সাইটে, শেষ দুই বছরের রেজাল্ট আরেক সাইটে।
৩। রেজাল্ট প্রকাশের দিন- যত হাজার ভিজিটরই আসুক – ওয়েবসাইট ডাউন হওয়া উচিত না। ১ সেকেন্ডের জন্যও না। রেজাল্ট প্রকাশের মাসে হোস্টিং খরচ অন্য মাসের তুলনায় ৩-১০ গুণ বেশি লাগলে লাগুক, কিন্তু ওয়েবসাইট ডাউন হওয়া উচিত না। Serverless Function আর Cloudflare এর যুগে এখন তো খুবই সহজ। কিন্তু না- আমাদের দেশে ১০-১৫ বছর আগের প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওয়েবসাইট ডেভেলপ করা হয়, হোস্ট করা হয়।
(আমি দুটি শিক্ষাবোর্ডের সাথে ভালোভাবে জড়িত এক/একাধিক ব্যক্তিকে প্রস্তাব দিয়েছি যে- এই রমযানে তাদের জন্য আমি রেজাল্টের ওয়েবসাইট ডেভেলপ করতে চাই, যথেষ্ট কম সম্মানি নিয়ে। এমনকি ডেমো বানিয়ে লিংক দিয়েও দিয়েছি। যোগযোগের নম্বর, অফলাইনে দেখা করতে আসতে চাইলে কবে তাদের সুবিধা হবে জানতে চেয়েছি। কিন্তু আল্লাহই জানেন- তারা দেখেননি, নাকি আমি অফলাইনে গিয়ে হাদিয়া তোহফা দিয়ে আমাকে কাজ/কন্ট্রাক্ট দেয়ার অনুরোধ করিনি দেখে রিপ্লাই পাচ্ছি না, নাকি তারা আমাকে প্রতারক / অযোগ্য মনে করছেন- কী যে!)